Logo

সাহিত্য সংস্কৃতি    >>   ৮ দফা দাবিতে শহীদ মিনারে সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

৮ দফা দাবিতে শহীদ মিনারে সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

৮ দফা দাবিতে শহীদ মিনারে সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের আয়োজনে একটি মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন সনাতনী সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলনকারীরা দলে দলে শহীদ মিনারে জড়ো হন। শঙ্খ বাজিয়ে এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে সমাবেশের সূচনা করেন তারা।

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ধীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র নির্মল বিশ্বাস, প্রসেনজিৎ কুমার হালদার, রাজেশ নাহা এবং পিযুষ দাস সমাবেশটি পরিচালনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ভাবনামৃত সংঘের সাধারণ সম্পাদক লীলারাজ ব্রহ্মচারী, পুন্ড্ররিক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, এবং আরও অনেক বিশিষ্ট জন।

বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের প্রতিনিধি প্রদীপ ক্রান্তি দে জানান, তারা ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য ক্ষমতায় বসা নয়, দেশের অস্থিতিশীলতা নয়; আমরা কেবল আমাদের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করছি।” তিনি আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানান যেন সমাবেশে রাষ্ট্র বিরোধী ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তব্য না দেওয়া হয়।

অ্যাডভোকেট সুশান্ত অধিকারী বলেন, “সরকার পতনের পর থেকে সংখ্যালঘুদের উপর যে হামলা ও লুটপাট শুরু হয়েছে, তা প্রমাণ করে যে তারা কতটা অনিরাপদ।” তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রয়োজন, নাহলে সমস্যা কখনও সমাধান হবে না।

সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, হিন্দু যুব মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি গৌতম হালদার প্রান্ত, ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

আট দফা দাবি

সমাবেশে আট দফা দাবি তুলে ধরা হয়, যা নিচে উল্লেখ করা হলো:

১. সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য "নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন" গঠন করে "দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল" প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যাতে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়।

২. অনতিবিলম্বে "সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন" প্রণয়ন করতে হবে।

৩. সংখ্যালঘু বিষয়ক একটি পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে।

৪. সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে এবং বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও উন্নীত করতে হবে।

৫. "দেবত্তোর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন" প্রণয়ন এবং "অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ" আইন কার্যকর করতে হবে।

৬. সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করতে হবে।

৭. সংস্কৃত পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন করতে হবে।

৮. শারদীয় দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটি দিতে হবে এবং প্রতিটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসবে প্রয়োজনীয় ছুটি প্রদান করতে হবে।

সমাবেশটি শেষ হয় একতাবদ্ধতার আহ্বানের মাধ্যমে, যেখানে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য একত্রিত হতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হন।